জীবনীশক্তি ও ATP-এর ভূমিকা: আসসালামু আলাইকুম, আমি লিছা, আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা। আমি জানি আপনারা “জীবনীশক্তি ও ATP-এর ভূমিকা” বিষয়ে ধারণা নিতে অনলাইনে সার্চ করছেন। তাহলে আপনি এখন সঠিক পোস্ট এ আছেন। এখানে আপনি এই বিষয় সম্পর্কে সব জানতে পারবেন। তো আসুন আমরা জেনে নিই।
জীবনীশক্তি ও ATP-এর ভূমিকা
জীবনীশক্তি বা জৈবশক্তি বলতে আমরা ভিন্ন বা বিশেষ কোনাে শক্তিকে বুঝাই না।
পদার্থবিজ্ঞানে শক্তির যে সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা থেকে, এটি আলাদা কিছু নয়, শুধু জীবদেহ বা জৈব অণুর রাসায়নিক বন্ধন ছিন্ন করার মাধ্যমে প্রাপ্ত শক্তিকে এই নামে ডাকা হয় মাত্র।
জীব প্রতিনিয়ত পরিবেশ থেকে শক্তি সংগ্রহ করে, সংগৃহীত শক্তিকে একরূপ থেকে অন্যরূপে পরিবর্তিত করে, কখনাে বা সঞ্চয় করে এবং শেষে সেই শক্তি আবার পরিবেশে ফিরিয়ে দেয়।
DNA এবং RNA-এর গাঠনিক উপাদানগুলাের একটি হলাে অ্যাডেনিন। এটি একটি নাইট্রোজেন বেস। এর সাথে পাঁচ কার্বনবিশিষ্ট রাইবােজ সুগার অণু যুক্ত হয়ে তৈরি হয় অ্যাডিনােসিন।
অ্যাডিনােসিন অণুর সাথে পর্যায়ক্রমে একটি, দুটি এবং তিনটি ফসফেট/ফসফোরিক এসিড গ্রুপ যুক্ত হয়ে যথাক্রমে অ্যাডিনােসিন মনােফসফেট (AMP), অ্যাডিনােসিন ডাইফসফেট (ADP) এবং অ্যাডিনােসিন ট্রাইফসফেট (ATP) গঠন করে।
এভাবে ফসফেট যুক্ত করতে বাইরে থেকে শক্তি দিতে হয়। এই বিক্রিয়ার নাম ফসফোরাইলেশন ।
আবার এর বিপরীত প্রক্রিয়ায়, ফসফেট গ্রুপ বিচ্ছিন্ন হলে শক্তি বের হয়ে আসে। এই বিক্রিয়ার নাম ডিফসফোরাইলেশন ।
উল্লেখ্য, প্রতিমােল ATP অণুর প্রান্তীয় ফসফেট গ্রুপে 7.3 কিলােক্যালরি (প্রায় 30.55 কিলােজুল) শক্তি জমা থাকতে পারে।
পরিবেশ থেকে শক্তি সংগ্রহ করে তাকে কোষের তথা জীবদেহের ব্যবহার উপযােগী রূপে পরিবর্তিত করার জন্য কাজ করে দুটি কোষীয় অঙ্গাণু: মাইটোকন্ড্রিয়া এবং প্লাস্টিড।
উভয়েরই রয়েছে ইলেকট্রন ট্রান্সপাের্ট সিস্টেম নামক একসেট বিশেষ জৈব অণু, যাদের কাজ হলাে পুষ্টি উপাদান (যেমন: গ্লুকোজ) বা কোনাে অন্তর্বর্তীকালীন অণুর শক্তিকে ATP-এর ফসফেট গ্রুপের বন্ধনশক্তি হিসেবে জমা করা।
আবার, ATP-এর রাসায়নিক বন্ধন ভেঙে যে শক্তি বের হয়, সেই শক্তি দিয়ে জীবদেহের প্রতিটি জৈবনিক কাজ অর্থাৎ, মাংসপেশির সংকোচন থেকে ইন্দ্রিয়ানুভূতি, খাবার খাওয়া থেকে হজম করা, নিঃশ্বাস নেওয়া থেকে কথা বলা, চিৎকার করা থেকে হাসি-কান্না, দৈহিক বৃদ্ধি থেকে প্রজনন, দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখা থেকে শুরু করে দেহের প্রতিটি কোষের স্বাভাবিক আয়তন বজায় রাখা এর সবই সম্পন্ন হয়।
আমরা যে খাবার খাই তা জারিত হয়, সেই জারণ থেকে নির্গত শক্তি দ্বারা ফসফোরাইলেশনের মাধ্যমে আবার সেই ভাঙা দুই টুকরা জোড়া লেগে ATP তৈরি হয়।
শক্তির প্রয়ােজন হলে তা আবার ভাঙে। তারপর খাদ্য থেকে শক্তি নিয়ে আবার জোড়া লাগে। এ যেন এক রিচার্জেবল ব্যাটারি। ATP শক্তি জমা করে রাখে এবং প্রয়ােজন অনুসারে অন্য বিক্রিয়ায় শক্তি সরবরাহ করে।
এজন্য ATP-কে অনেক সময় 'জৈবমুদ্রা' বা 'শক্তি মুদ্রা' বলা হয়।
আশা করি এই পোস্টটি আপনার অনেক ভালো লেগেছে। এর সাথে জীবনীশক্তি ও ATP-এর ভূমিকা বিষয়টিও আপনি বুঝতে পেরেছেন। যদি এই পোস্টটি থেকে কিছু উপকার পান, তাহলে আপনার বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।