বিল্ডিংয়ের ফ্যাক্টর অফ সেফটি সম্পর্কে

আজকে আমরা সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ভাইদের জন্য নিয়ে এসেছি “বিল্ডিংয়ের ফ্যাক্টর অফ সেফটি সম্পর্কে”। আসা করি আপনাদের এই টপিক পছন্দ হবে। তো চলুন পড়া যাক:

বিল্ডিংয়ের ফ্যাক্টর অফ সেফটি সম্পর্কে

একটা বিল্ডিং ডিজাইনে যে পরিমাণ ফ্যাক্টর অফ সেফটি ধরা হয়,

তাতে তা কলাপ্স করার সম্ভাবনাই থাকে না।

কিন্তু তারপরেও এতো বিল্ডিং কেন

ধসে পড়ছে?

এবার আসুন দেখি ফ্যাক্টর অফ সেফটি:

১) সয়েল টেস্ট রিপোর্টের মাটির বিয়ারিং কেপাসিটিতে ২-৩ পর্যন্ত ফ্যাক্টর অফ সেফটি ধরা থাকে।

২) লোড কম্বিনেশনে ডেড লোড আর লাইভ লোডে যথাক্রমে ১.২ ও ১.৬ ফ্যাক্টর অফ সেফটি ধরা থাকে।

৩) ঝড় তুফান আর ভূমিকম্পের

সাথে সর্বোচ্চ লাইভ লোড পাবার সম্ভাবনাও খুবই কম, তাই লোড কম্বিনেশনেও একটা সুবিধা পাওয়া যায়।

৪) মোমেন্ট হিসাবেও একটা ফ্যাক্টর অফ সেফটি ধরা থাকে।

৫) ভালো ডিজাইনাররা ডিজাইনে ঢালাইয়ের স্ট্রেন্থ ২৫০০ পিএসআই ধরলেও বাস্তবে ৩০০০ পিএসআই কনক্রিট স্ট্রেন্থের সাজেস্ট করেন।

৬) অনেক ডিজাইনার আবার কলাম/বিম ডিজাইনে যা রড আসে তারচেয়ে একটা বা দুটা রড বেশি দেন।তাহলে বলেন, বিল্ডিং কেন ধসে??????

এখন আসেন দেখি, পাবলিকেরঅতি পন্ডিতি কিভাবে একটা বিল্ডিং ডিজাইনকে দুর্বল করে--------

১)মালিকের পইতালি—

যদি ডিজাইনে পাইল দেন, তাহলে হুদাই ঘ্যানর ঘ্যানর করবে এই বলে, “ ভাই পাইলটা কি কুনো ভাবেই বাদ দেয়া যায় না???”

আপনে যদি “না” করেন তাহলে জমির মালিক

অতি জ্ঞানী হইলে আপনারে এভয়েড করে কিছু কিছু ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার আছে, তাদের দিয়া থাম্ব রুলে পাইল বাদ দিয়ে বিল্ডিং বানাবে।

আপনে বিল্ডিং এর বিম/ কলামে যে রড যে কয়টা দিতে বলবেন, সে পাশের বাড়ির কলামের রডের সাথে তুলনা করে তার চেয়ে কম রড দিবে। আর

সাথে তো তত্ত্বাবধায়ক উপদেষ্টা মি. রাজমিস্ত্রি ওরফে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার তো আছেই। মালিক আর রাজমিস্ত্রির

এহেন মাদবুরি উপরের বর্ণিত ১,২,৩,৪ আর ৬ নং ফ্যাক্টর অফ সেফটিকে দুর্বল করে ফেলবে।

সাধারণত সিমেন্টের গুনাগুণ সর্বোচ্চ দুই মাস পর্যন্ত মোটামোটি ভালো থাকতে

পারে, যদি আপনে তা ভালো করে সংরক্ষণ করতে পারেন। কিন্তু অধিকাংশ সময়ে ডেম

সিমেন্ট দিয়েই অনেকে ঢালাই করে। এটা ৫ নং ফ্যাক্টর অফ সেফটিকে দুর্বল করে ফেলবে।

২)মি রাজমিস্ত্রি ওরফে সিভিল

ইঞ্জিনিয়ারের পইতালি এদের টলটলা ঢালাই

মসলা না হলে মন ভরে না, তাই

ঢালাইয়ের বন্ধু কাম শত্রু অতিরিক্ত পানি দিয়ে মসলা মিশাবে যা ৫ নং ফ্যাক্টর অফ

সেফটিকে দুর্বল করে ফেলবে। ডিজাইনারের

অবর্তমানে অতি আগ্রহে জমির মালিকের টাকা সেইভ করার জন্য বিভিন্ন সময় রডের

ডিজাইন চেঞ্জ করবে এবং সিমেন্ট কম দিবে।

কিন্তু ঢালাইয়ের মালটা ভালো করে মিশাবে

না কিংবা কাস্টিং করার সময় ভালো করে কম্পেক্ট করবে না। এতে করে ফ্যাক্টর

অফ সেফটিগুলো আবার দুর্বল হবে। আবার আপনে ডিজাইন করাবেন কমার্শিয়াল

বিল্ডিং কিন্তু সেখানে ভাড়া দিবেন

ফ্যাক্টরি, কিংবা ডিজাইনারকে বলবেন

৬ তালা করবেন কিন্তু বাস্তবে করবেন ৯ তালা,

সেক্ষেত্রে আপনার অতি মুনাফা লোভ

সবগুলা ফ্যাক্টর অফ সেফটিগুলো খেয়ে ফেলবে।

সুতরাং বুঝতেই পারতাছেন আপনাদের

উস্তাদি প্রতি ধাপে ধাপে কিভাবে ফ্যাক্টর অফ

সেফটিগুলো খেয়ে ফেলে। যার কাজ তাকে করতে দিন এবং দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে বিল্ডিং বানান।


আশা করি আপনারা বিল্ডিংয়ের ফ্যাক্টর অফ সেফটি সম্পর্কে, টপিকটি বুঝতে পেরেছেন। যদি এই পোস্ট টি আপনার উপকারে আসে তা হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন