পাথর (stone) কি বা কাকে বলে ?
পাথর (stone) হলো খুবই শক্ত, মজবুত ও দীর্ঘস্থায়ী সামগ্রী। পাথর (stone) প্রাকৃতিক উপায়ে গঠিত জটিল রাসায়নিক যৌগবিশেষ।
বহুবিদ খনিজ সামগ্রী দীর্ঘমেয়াদি প্রাকৃতিক তাপ, চাপ ইত্যাদির প্রভাবে জটিল রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় জমাটবদ্ধ হয়ে পাথর (stone)এর উৎপত্তি ঘটায়। বহুবিধ খনিজ পদার্থএর জটিল রাসায়নিক যৌগই পাথর (stone)।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যাটএরিয়ালস-এ নির্মাণসামগ্রী পাথর (stone)এর গুরুত্ব
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (Civil Engineering) ম্যাটএরিয়ালস এ পাথর (stone) খু্বই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যাটএরিয়ালস এ পাথর (stone)এর বহুবিধ ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। মানুষ আদিকাল থেকে পাথর (stone) ব্যবহার করে আসছে।
প্রস্তর যুগএর মানুষ পাথর (stone)কে আত্মরক্ষা ও পশু শিকারএর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করত। কালক্রমে এ পাথর (stone) নির্মাণএর প্রধান উপকরণ এ পরিণত হয়। সড়ক, সেতু, ইমারত ইত্যাদি নির্মাণকার্যে পাথর (stone) ব্যবহার করা হয়।
যেসকল পাথর (stone) আকৃতি প্রদত্ত শিলা হতে সংগৃহীত, দৃঢ়, শক্ত, সমসত্ত্ব, অগ্নিরোধী, ক্ষয়রোধী, টেকসই, ওজনে ভারি, আকার-আকৃতিসম্পন্ন এ জাতীয় পাথর (stone)ই নির্মাণ পাথর (stone)।
নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত সামগ্রী সমূহএর মধ্যে পাথর (stone)এর ন্যায় স্থায়িত্বশীল সামগ্রী অন্য আর একটিও নেই বিধায় পাথর (stone)কে নির্মাণ উপকরণএর রাজা বলা হয়।
খনির সমূহএর ভৌত ও রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যএর উপর পাথর (stone)এর গঠন, বুনট, বর্ণ, ভঙ্গুরতা, দৃঢ়তা, চুম্বকতা, আপেক্ষিক গুরুত্ব, ওজন নির্ভর করে। শিলা এবং পাথর (stone) সচারাচর একই অর্থে ব্যবহৃত হয়।
ভূতাত্ত্বিক ও রসায়নবিদদএর মতে, প্রায় দুইশত খনিজ পদার্থ বিভিন্ন প্রকার পাথর (stone) গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
পাথর (stone) খুবই মজবুত, শক্ত, দীর্ঘস্থায়ী এবং আবহাওয়া ও পারিপার্শ্বিক প্রতিক্রিয়া পাথর (stone)এর তেমন কোন ক্ষতিসাধন করতে পারে না। এজন্য আমরা বলতে পারি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং (Civil Engineering) ম্যাটএরিয়ালস-এ নির্মাণসামগ্রী হিসাবে পাথর (stone)এর গুরুত্ব অপরিসীম। পাথর (stone)এর ইতিহাস সম্পর্কে জানুন…
পাথর (stone)এর গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সমূহ
১. কোয়ার্টজ বা সিলিকা:
কোয়ার্টজএর উপর জলবায়ুর প্রভার খুবই কম। বিশুদ্ধ কোয়ার্টজএর বর্ণ সাদা। বালিজাত পাথর (stone) গঠনে এর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এর আপেক্ষিক গুরুত্ব ২.৬৬ এবং কাঠিন্য নম্বর ৭।কোয়ার্টজাইট, গ্রানাইট, নিস ও বেলেপাথর (stone) এর প্রাধান্য দেখা যায়।
২. মাইকা:
এটা অ্যালুমিনা, সিলিকা, ম্যাগনেসিয়াম ও আয়রনএর জটিল সিলিকেটএর সমন্বয়ে গঠিত। শুভ্র মাইকা মাসকোভাইট এবং কৃষ্ণ মাইকা বায়োটাইট নামে পরিচিত। মাইকা পাথর (stone)এর বুনটে দুর্বলতা সৃষ্টি করে।
যে পাথর (stone) মাইকার মাত্রা যত বেশি ঐ পাথর (stone)ে ততো কম শক্তি সম্পন্ন হয়। গ্রানাইট, নিস, ও সিস্ট পাথর (stone)ে মাইকার উপস্থিতি দেখা যায়। এর আপেক্ষিক গুরুত্ব ২.৫ এবং কাঠিন্য নম্বর ৩।
৩. অ্যামফিবোল:
এটা সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন ও অ্যালুমিনিয়ামএর জটিল সিলিকেট এর গঠন দানাদার এবং খুব শক্ত। এর বর্ণ কালো হতে সবুজ হয়ে তাকে। এবং কাঠিন্য নম্বর ৫.৫ এবং আপেক্ষিক গুরুত্ব ৩.২।
৪. অলিভিন:
এটা ম্যাগনেসিয়াম আয়রন ও সিলিকন সমন্বয়ে গঠিত। সকল ব্যাসাল্ট পাথর (stone)এর এর উপস্থিতি লক্ষণীয়। এটা কাচএর মতো মসৃণ, বর্ণ হলুদাভ সবুজ এবং খুব শক্ত। এবং কাঠিন্য নম্বর ৬.৫ এবং এর আপেক্ষিক গুরুত্ব ৩.৫।
৫. ক্যালসাইট:
এটা ক্যালসাইট কার্বনেট। চুনাপাথর (stone) ও মার্বেল পাথর (stone)ে এর আধিক্য পরিলক্ষিত হয়। এর গঠন দানাদার তবে খুব শক্ত হয়। এর বর্ণ সাদা তবে ধূসর বর্ণএর ও হতে পারে। এর আপেক্ষিক গুরুত্ব ২.৭ এবং কাঠিন্য নম্বর ৩।
৬. ডোলোমাইট:
এটা ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম কার্বনেটে গঠিত। এটা ক্যালসাইট অপেক্ষা শক্ত। ডোমোমাইটিক চুনাপাথর (stone) ও ডেলোমাইটিক মার্বেলে এর উপস্থিত দেখা যায়। এর আপেক্ষিক গুরুত্ব ২.৮৬।
৭. গারনেট:
এটা লাইম অ্যালুমিয়া বা ম্যাগনেশিয়া অ্যালুমিনার জটিল সিলিকেট বিশেষ। এতে কিয়ৎ পরিমাণ ম্যাঙ্গানিজ ও আয়রন থাকতে পারে। এটা সাধারণত সবুজ বর্ণএর, বুনট দানাদার। এর আপেক্ষিক গুরুত্ব ৪ এবং কাঠিন্য নম্বর ৭।
যদি এই পোস্ট টি আপনার উপকারে আসে তা হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।