নেটওয়ার্ক কি? নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ, প্রয়োজনীয়তা ও অসুবিধা [2023]

নেটওয়ার্ক (Network) কি? নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ, প্রয়োজনীয়তা ও অসুবিধা।:  আসসালামু আলাইকুম, আমি লিছা, আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি কিছু গুরুত্বপূর্ণ লেখা। আমি জানি আপনারা “নেটওয়ার্ক (Network) কি? নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ, প্রয়োজনীয়তা ও অসুবিধা।” বিষয়ে ধারণা নিতে অনলাইনে সার্চ করছেন। 

তাহলে আপনি এখন সঠিক পোস্ট এ আছেন। এখানে আপনি এই বিষয় সম্পর্কে সব জানতে পারবেন। তো আসুন আমরা জেনে নিই।

নেটওয়ার্ক কি? নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ, প্রয়োজনীয়তা ও অসুবিধা

নেটওয়ার্ক  কি? নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ, প্রয়োজনীয়তা ও অসুবিধা।

নেটওয়ার্ক হলো এমন সিস্টেম যেখানে সবাই মিলে শেয়ার করা যায় বা একসাথে কাজ করা যায়।

নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ 

ক) ভৌগোলিক বিস্তৃতি বা আকার ও বিস্তৃতি অনুসারে নেটওয়ার্কের শ্রেণীবিভাগ

১) পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা প্যান (Personal Area Network-PAN) : কোন ব্যক্তির নিকটবর্তী বিভিন্ন ইনফরমেশন টেকনোলজির ডিভাইসের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানের নেটওয়ার্ক সিস্টেমকে পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (PAN) বলা হয়। প্যান এর ব্যাপ্তি বা সীমা সাধারণত ১০ মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

২) লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (Local Area Network = LAN) : সাধারণত ১০ কিমি. বা তার কম এলাকার মধ্যে বেশ কিছু কম্পিউটার বা অন্য কোন পেরিফেরাল ডিভাইস সংযুক্ত করে যে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়, তাকে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক (LAN) বলা হয়।

৩) মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক (Metropolitan Area Network = MAN) : একই শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত কিছু কম্পিউটার বা ডিভাইস নিয়ে যে নেটওয়ার্ক গঠিত হয় তাকে মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক বা MAN বলে।

 এখানে ট্রান্সমিশন মিডিয়া হিসেবে টেলিফোন লাইন, মডেম বা কোন কোন ক্ষেত্রে মাইক্রোওয়েভ ব্যবহার করা হয়। MAN-এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক।

৪) ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (Wide Area Network = WAN) : যেসব নেটওয়ার্ক দূরবর্তী স্থানসমূহের মাঝে করা হয়, তাকে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বলা হয়। 

যেমন- ঢাকা, চট্টগ্রাম, নিউইয়র্ক এমন তিনটি শহরের মধ্যে যদি নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়, তবে তাকে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বলা হবে। এই নেটওয়ার্ক সিস্টেমে ট্রান্সমিশন মিডিয়া হিসেবে টেলিফোন লাইন, স্যাটেলাইট, মাইক্রোওয়েভ, ফাইবার অপটিক ক্যাবল ব্যবহৃত হয়। WAN-এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো ইন্টারনেট। WAN নেটওয়ার্ক সাধারণত ১০০ মাইলের বেশি দুরত্ব পর্যন্ত নেটওয়ার্ক কভারেজ করতে পারে।


খ) নেটওয়ার্কের ধরন কাঠামো ও সার্ভিস প্রদানের ধরন অনুসারে নেটওয়ার্কের শ্রেণীবিভাগ


১) ক্লায়েন্ট সার্ভার নেটওয়ার্ক (Client Server Network) : কোনো কম্পিউটারে সংরক্ষিত রিসোর্সসমূহ যদি একসাথে এবং একই সময়ে অনেক ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারে বা শেযার করতে পারে তাকে সার্ভার (Server) বলা হয়। একে সার্ভার বলা হয় কারণ এটি বিভিন্ন ব্যবহারকারীকে একই সময়ে বা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের সার্ভিস বা সেবা প্রদান করে থাকে।


২) পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক (Peer to Peer Network) : পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট কোনো সার্ভার থাকে না। এতে সংযুক্ত সকল কম্পিউটারই এই প্রোটোকল অনুসরণে সার্ভার বা ক্লায়েন্ট হিসাবে কাজ করতে পারে। 

পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্কের সেটআপ খুব সহজ। ব্যবহারকারী যে কোনো রিসোর্স ভাগাভাগি করতে পারেন। পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্কে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই। একাধিক নেটওয়ার্কের সাথে সংযোগ দেওয়া অসুবিধাজনক।

নেটওয়ার্কের প্রয়োজনীয়তা 

বিভিন্ন দূরত্বে অবস্থিত একাধিক কম্পিউটার যখন আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান এবং প্রক্রিয়াকরণ করতে পারে তখন সম্পূর্ণ সিস্টেমকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা শুধু নেটওয়ার্কও বলা হয়। 

দুটি কম্পিউটারকে যখন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নিয়ে আসা হয় তখন আমরা প্রধান যে সুবিধা পায় তাহলো দুটি কম্পিউটার পরস্পরের রিসোর্স শেয়ার করতে পারে। রিসোর্স বলতে এখানে তথ্য এবং হার্ডওয়্যার ডিভাইসকে বোঝায়। 

পার্সোনাল কম্পিউটারকে ব্যক্তিগত ব্যবহারযোগ্য কম্পিউটার বলা হয়। কিন্তু যখন একটি প্রতিষ্ঠানে অনেকগুলো পিসি ব্যবহার করা হয় তখনও একটি কম্পিউটার মাত্র একজন ব্যবহারকারীই ব্যবহার করতে পারেন। 

কিন্তু যদি কম্পিউটারগুলোর মধ্যে উপযুক্ত নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা যায় তাহলে এক কম্পিউটারের তথ্য অন্য কম্পিউটার ব্যবহার করতে পারেন। এর ফলে কাজের অনেক সুবিধা হয়। 

নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একটি মাত্র হার্ডওয়্যার ডিভাইস একজন ব্যবহার না করে অনেকে একসঙ্গে ব্যবহার করতে পারে। যেমন ধরা যাক একটি অফিসে কম্পিউটার আছে পাঁচটি এবং প্রিন্টার আছে একটি। প্রিন্টার দিয়ে সবসময় কাজ করা হয় না। 

ফলে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পাঁচজন ব্যবহারকারী প্রিন্টারটি শেয়ার করে ব্যবহার করতে পারে। আজকাল আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি। ইন্টারনেটও এক ধরনের নেটওয়ার্ক। 

কম্পিউটার নেটওয়ার্কে আন্তঃসংযোগ মাধ্যম হিসাবে তার, অপটিক্যাল ফাইবার, মাইক্রোওয়েভ ইত্যাদি মাধ্যম ব্যবহৃত হয়। এই মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে এক কম্পিউটার হতে তথ্য অন্য কম্পিউটারে সঞ্চালিত হয়। কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত প্রতিটি কম্পিউটারই একটি স্বতন্ত্র কম্পিউটার হিসাবে কাজ করতে পারে।

নেটওয়ার্কের অসুবিধা

নেটওয়ার্কের অনেক সফলতার মাঝে দু একটি অসুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ইন্টারনেটে ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য প্রকাশ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। অনেক সময় দক্ষ হ্যাকাররা ব্যাংকের একাউন্ট হ্যাক করছে।

 আবার অপ্রাপ্ত বয়সের ছেলেমেয়েরা অনেক অশ্লীল ওয়েব সাইট ভিজিট করে, ফলে তাদের মধ্যে নৈতিক অবক্ষয় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এছাড়াও ইন্টারনেটের মাধ্যমে কম্পিউটারে ভাইরাস ছড়ানোর আশংকা থাকে।

নেটওয়ার্ক সম্পর্কিত বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর

১। পারসোনাল কম্পিউটার যুক্ত করে নিচের কোনটি তৈরি করা হয়?

a) Super Computer  b) Network

c) Server  d) Enterprise

২। স্বল্প দূরত্বের নেটওয়ার্কিং এর জন্য কোনটি ব্যবহৃত হয়?

a) ইন্টারনেট  b) ইন্ট্রানেট

c) LAN  d) MAN

উত্তরঃ–

১ : b); ১ : c);

আশা করি এই পোস্টটি আপনার অনেক ভালো লেগেছে। এর সাথে নেটওয়ার্ক (Network) কি? নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ, প্রয়োজনীয়তা ও অসুবিধা। বিষয়টিও আপনি বুঝতে পেরেছেন। যদি এই পোস্টটি থেকে কিছু উপকার পান, তাহলে আপনার বন্ধুর সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন