পঞ্চম শ্রেণি - বাংলা রচনা (৬): আসসালামু আলাইকুম, আমি জানি আপনারা “পঞ্চম শ্রেণি - বাংলা রচনা (৬)” বিষয়ে ধারণা নিতে অনলাইনে সার্চ করছেন।
এখানে আপনি এই বিষয় সম্পর্কে সব জানতে পারবেন। তো আসুন আমরা জেনে নিই।
পঞ্চম শ্রেণি - বাংলা রচনা (৬)
(১) জাতীয় ফল কাঁঠাল
ভূমিকা
কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল। একটি রসাল ও সুস্বাদু ফল হিসেবে কাঁঠাল বিখ্যাত। এটি গ্রীস্মকালের ফল। তবে বর্ষা ও বর্ষার পরেও কিছুদিন কাঁঠাল পাওয়া যায়।
প্রকৃতি
কাঁঠালগাছ বেশ বড় ও অনেক দিন বাঁচে। একই গাছ থেকে অনেক বছর ধরে কাঁঠাল পাওয়া যায়। মাঘ-ফাল্পুন মাসে কাঁঠালগাছে মুচি ধরে। মুচি থেকে কাঁঠাল হয়। চৈত্র মাস থেকে কাঁঠাল বড় হতে থাকে। বৈশাখ মাস থেকে কাঁঠাল ধরে। কাঁঠালগাছের শিকড় থেকে কাণ্ড, ডালপালার পর্যন্ত কাঁঠাল ধরে। একটি কাঁঠালগাছে ১০০-৩০০টি পর্যন্ত কাঁঠাল ধরে।
একেকটি কাঁঠাল আকারে বিরাট এবং ওজনেও ৩০-৪০ কেজি হতে দেখা যায়। কাঁঠাল ছোট-বড় সব রকমেরই হয়। কাঁঠালের চামড়া খরখরে কাঁটাযুক্ত। কাঁঠালের ভেতর কোষ হয়। একটি কোষে একটি বিচি থাকে। কাঁঠালের বীজ থেকে চারাগাছ হয়। গাছের গোড়ায় বেশিদিন পানি থাকলে কাঁঠালগাছ মরে যায়।
প্রাপ্তিস্থান
কাঁঠাল বাংলাদেশের সর্বত্রই কমবেশি পাওয়া যায়। নরসিংদী, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, যশোরে বেশি কাঁঠাল পাওয়া যায়।
উপকারিতা
কাঁঠাল উপাদেয় ও পুষ্টিকর ফল। কাঁচা কাঁঠালের তরকারি অত্যন্ত সুস্বাদু। কাঁঠাল এমন একটি ফল যার বিচিও খাওয়ার উপযোগী এবং উপকারী। কাঁঠালের বিচি তরকারি হিসেবে দারুণ ক্যালরিযুক্ত। কাঁঠালের মোটা খোসা গরু-মহিষের প্রিয় খাদ্য। পাকা কাঁঠাল খেতে খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু।
অপকারিতা
কাঁঠাল খুব গুরুপাক। সহজে হজম হয় না। বেশি কাঁঠাল খেলে পেটে পীড়া হয়। এ জন্য কাঁঠাল একসঙ্গে বেশি খাওয়া উচিত নয়। অবশ্য অনেক গরিব লোক কাঁঠাল খেয়েই দিন কাটিয়ে দেয়।
বিদেশে চাহিদা
আমাদের দেশে যে পরিমাণ কাঁঠাল উৎপন্ন হয়, তার বেশ কিছু পরিমাণ নষ্ট হয়ে যায়। কাঁঠাল এ দেশের সম্পদ। আমরা প্রক্রিয়াজাত করে কাঁঠালের জ্যাম, জেলি, জুস ইত্যাদি বিদেশে রপ্তানি করতে পারি।
এ ব্যাপারে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ খুবই জরুরি। এ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সহজেই হতে পারে, যা আমাদের দেশের উন্নয়নেরও কাজে লাগবে।
উপসংহার
কাঁঠাল মৌসুমি ফল। বাংলাদেশের ফলের মধ্যে সবচেয়ে প্রোটিনযুক্ত ফল কাঁঠাল। তাই বাড়ির চারপাশে কাঁঠালগাছ লাগিয়ে এর ফলন প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি করা উচিত।
(২) বৃক্ষরোপণ
সংকেত : ভূমিকা, বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা, জীবন ও পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষ, বৃক্ষ সংরক্ষণে করণীয়, উপসংহার
ভূমিকা
বৃক্ষ আমাদের পরম বন্ধু। বৃক্ষ শুধু প্রাকৃতিক শোভাই বাড়ায় না, মাটির ক্ষয় রোধ করে, বন্যা প্রতিরোধ করে, ঝড়–তুফানকে বাধা দিয়ে জীবন ও সম্পদ রক্ষা করে। আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণেও বৃক্ষের ভূমিকা অপরিসীম। বৃক্ষ ছাড়া পৃথিবী মরুভূমিতে পরিণত হতো। বৃক্ষ অক্সিজেন সরবরাহ করে আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।
বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা
আমাদের জীবনে বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। বৃক্ষ থেকে পাওয়া অক্সিজেন গ্রহণ করেই আমরা বেঁচে থাকি। বৃক্ষ আমাদের পরিবেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং অন্যতম বনজ সম্পদ। বৃক্ষের পাতা, ফল ও বীজ আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি। বৃক্ষ থেকে তন্তু আহরণ করে আমাদের পরিধেয় বস্ত্র প্রস্তুত করা হয়। বৃক্ষ থেকে প্রাপ্ত কাঠ দিয়ে আমাদের বাড়িঘর ও আসবাব তৈরি করা হয়। আমাদের অতিপ্রয়োজনীয় লেখার সামগ্রী কাগজ ও পেনসিল বৃক্ষের কাঠ দিয়েই তৈরি করা হয়। আমাদের রোগ নিরাময়ের ওষুধও এই বৃক্ষ থেকেই তৈরি করা হয়।
জীবন ও পরিবেশ রক্ষায় বৃক্ষ
জীবজগৎকে ছায়া দিয়ে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে বৃক্ষ। বিস্তৃত বনাঞ্চলের বৃক্ষ জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ুকে ঘনীভূত করে বৃষ্টিপাত ঘটায়। বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস গ্রহণ করে বৃক্ষ অক্সিজেন গ্যাস ছেড়ে দেয়, যা মানুষ ও অন্য প্রাণিকুল শ্বাসপ্রশ্বাসের জন্য গ্রহণ করে।
বৃক্ষ সংরক্ষণে করণীয়
বিভিন্ন প্রকার শিল্পের উপকরণ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার সীমাহীন প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের বৃক্ষের সংখ্যা নিতান্তই নগণ্য। আমাদের প্রত্যেকেরই উচিত পরিকল্পিতভাবে বৃক্ষরোপণে অংশগ্রহণ করা। দেশের অর্থনীতি ও জনজীবনে স্বাচ্ছন্দ্য আনার জন্য আমাদের প্রত্যেকের প্রতিবছর অন্তত দুটি করে বৃক্ষ রোপণ করা দরকার।
উপসংহার
বৃক্ষহীন পরিবেশ জীবন ও জীবিকার জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই এই সম্পদের ক্রমবর্ধমান ঘাটতি পূরণের জন্য লাগামহীন বৃক্ষনিধন বন্ধ করা দরকার। পাশাপাশি বৃক্ষরোপণ জোরদার করার প্রতি আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। ‘আসুন গাছ লাগাই, পরিবেশ বাঁচাই’—এ স্লোগানকে যদি আমরা মিলিতভাবে গ্রহণ করি ও কাজে লাগাই, তাহলে আমাদের বনজ সম্পদ বৃদ্ধি পাবে এবং পরিবেশও সুন্দর হবে।
(৩) মোবাইল ফোন
ভূমিকা
আজকের দিনে মোবাইল ফোন খুব প্রয়োজনীয় জিনিস। দূরে বা কাছে যোগাযোগের জন্য এটি ছাড়া যেন চলেই না। শুধু যোগাযোগ কেন, নানা কাজেই এখন এটি ব্যবহার করা হয়।
মোবাইল ফোন কী
মোবাইল ফোন একটি ছোট আকারের বৈদ্যুতিক ডিভাইস, যার সাহায্যে সেলুলার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ফুল ডুপ্লেক্স বা দ্বিমুখী রেডিও যোগাযোগ করা হয়। প্রতিটি মোবাইল ফোনে একটি ‘অ্যান্টেনা’ থাকে। এগুলোর মাধ্যমে একজনের সাথে অন্যজনের দ্রুত যোগাযোগের সুযোগ তৈরি হয়।
আবিষ্কারক
মোবাইল ফোন ব্যক্তিগতভাবে বা একক চেষ্টায় কেউ আবিষ্কার করেননি। বিভিন্ন বিজ্ঞানীর নানা প্রচেষ্টা ও প্রযুক্তি উন্নয়নের মধ্য দিয়ে ১৯৭৩ সালে প্রথম হাতে ধরা ছোট মোবাইল সেট তৈরি হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে। আর তা তৈরি করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মার্টিন কুপার। তাঁকেই বলা হয় মোবাইল ফোনের জনক।
সুবিধা
মোবাইল ফোনের অনেক সুবিধা আছে। এর মাধ্যমে যে কারও সাথে যতক্ষণ ইচ্ছা কথা বলা যায়। নেটওয়ার্কের সমস্যা হলে টাইপ করে খুদে বার্তা (মেসেজ) পাঠানো যায়। এটা দিয়ে ছবি তোলা যায়, ভিডিও চিত্র ধারণ করা যায়, রেডিও শোনা যায়, টিভি দেখা যায়, এমনকি গেমসও খেলা যায়। অনেক রকম হিসাব-নিকাশ (ক্যালকুলেটর) করার পাশাপাশি এখন এটা দিয়ে ইন্টারনেটে তথ্য সংগ্রহ করা যায়। এখনকার দিনে মোবাইলে কথা বলার সময় পরস্পর পরস্পরের ছবিও দেখতে পারে। আবার এটা দিয়ে কম্পিউটারের কিছু কিছু কাজও করা যায়।
অসুবিধা
মোবাইল ফোনের কিছু অসুবিধাও আছে। এটি দিয়ে বেশি সময় কথা বলা ঠিক নয়। তাতে কানের ক্ষতি হয়, ফুসফুস ও হার্টে চাপ বাড়ে। এমনকি মস্তিষ্কেরও (ব্রেইনের) ক্ষতি হতে পারে। অধিক সময় গেম খেললে বা ভিডিও দেখলে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়। তা ছাড়া এটির অপব্যবহারে সময়ের ক্ষতি হয়, পড়াশোনার ক্ষতি হয়, কাজকর্মের ক্ষতি হয়।
উপসংহার
মোবাইল ব্যবহার মানুষের ভালোর জন্য, মানুষের উপকারের জন্য। কিন্তু বর্তমানে মোবাইলে অপসংস্কৃতির চর্চা বাড়ছে, অনৈতিক কাজকর্মের সুযোগ নেওয়া হচ্ছে। তাই সুস্থ চিন্তা, সুস্থ চর্চা এবং মোবাইলের কল্যাণকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
(৪) সোনারগাঁ
[সংকেত : ভূমিকা, অবস্থান, শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র, দৃষ্টিনন্দন সোনারগাঁ, লোকশিল্প জাদুঘর, উপসংহার]
ভূমিকা
সোনারগাঁ বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থান। এর প্রাচীন নাম সুবর্ণগ্রাম। প্রাচীন যুগে এটি বঙ্গ বা সমতট রাজ্যের রাজধানী ছিল। মধ্যযুগে এটি বন্দরনগরী হিসেবে গড়ে ওঠে। চীন, ইন্দোনেশিয়া ও মালয় দ্বীপপুঞ্জের সাথে এর বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল। পরবর্তী সময়ে এটি দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার রাজধানী ছিল। ঈশা খাঁ ছিলেন এ অঞ্চলের শাসনকর্তা।
অবস্থান
সোনারগাঁ ঢাকার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবিস্থত । ঢাকা থেকে দূরত্ব ২৭ কিলোমিটার। এটি নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি দর্শনীয় এলাকা। যাত্রাবাড়ী পার হয়ে ঢাকা–চট্টগ্রাম সড়ক ধরে কাঁচপুর ব্রিজ পেরিয়ে মোগরাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে নেমে অল্পদূর এগোলেই সোনারগাঁ।
শিল্প-সংস্কৃতি কেন্দ্র
প্রাচীনকাল থেকেই সোনারগাঁ শিল্প-সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল। এখানকার তৈরি ‘মসলিন’-এর খ্যাতি ছিল বিশ্বজোড়া। পরে এটি ‘জামদানি’ও সুতি কাপড়ের প্রধান কেন্দ্র হয়ে ওঠে।
দৃষ্টিনন্দন সোনারগাঁ
সোনারগাঁজুড়ে সবুজের সমারোহ। পরিখা ও লেক দিয়ে প্রায় ঘেরা। প্রাচীন মসজিদ, ব্রিজ ও প্রাসাদগুলোর কারুকাজ সত্যিই মন কেড়ে নেয়। মসজিদ ও ছোট উঁচু ব্রিজ মুঘলরা বঙ্গদেশে আসার আগে ১৫১৯ সালে নির্মিত হয়েছিল। পানামনগরের দালানগুলো জরাজীর্ণ হলেও সূক্ষ্ম ও দৃষ্টিনন্দন নির্মাণকাজ অপূর্ব মনে হয়।
লোকশিল্প জাদুঘর
জাদুঘরটির আদি নাম সর্দারবাড়ি। এর সামনে গাছগাছালিতে ভরা শান্ত পুকুর। পুকুরপাড়ে ঘোড়ায় আরোহী সৈনিকের ভাস্কর্য। পাশ দিয়ে সুন্দর রাস্তা ও বাগান। জাদুঘরে রয়েছে কাঠের তৈরি জিনিস, মুখোশ, মাটির পাত্র, মাটির পুতুল, বাঁশ-লোহা-কাঁসার তৈরি নানা জিনিসপত্র ও অলংকার।
এ ছাড়া এখানে রয়েছে প্রাচীনকালে ব্যবহৃত তরবারি, বল্লম ইত্যাদি অস্ত্র। পাশের ভবনে রয়েছে জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের অনেক বিখ্যাত ছবি, নকশিকাঁথা, জামদানি শাড়ি ইত্যাদি।
উপসংহার
সোনারগাঁ এলে তারই স্পর্শ অনুভব করা যায়। এর ইতিহাস ও ঐতিহ্য সত্যিই অসাধারণ।
(৫) বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ
[সংকেত: ভূমিকা, বর্ণনা, যেখানে পাওয়া যায়, খাদ্য, উৎপাদন ও বিপণন, সুস্বাদু ইলিশ, উপসংহার]
ভূমিকা
আমাদের দেশে অনেক রকম ছোট-বড় মাছ পাওয়া যায়। সবই সুস্বাদু। কিন্তু ইলিশের কাছে অন্যসব মাছের স্বাদ তুচ্ছ। ইলিশের রং, আকার আর স্বাদের মধ্যেই তার পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য নিহিত। বাঙালির পছন্দের মাছ ইলিশ। আর এ কারণে বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ।
বর্ণনা
মাঝারি আকারের রুপালি রঙের এ মাছের দেহ চাপা ও পুরু। রুপালি আঁশে আবৃত এ মাছ সর্বোচ্চ ৬০ সে.মি. লম্বা হয়। আর ওজন হয় প্রায় আড়াই কেজি পর্যন্ত। স্ত্রী ইলিশ দ্রুত বাড়ে এবং আকারে বড় হয়।
যেখানে পাওয়া যায়
ইলিশ লোনা পানির মাছ। বাংলাদেশের উপকূলীয় নদীগুলোতে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যায়। এ ছাড়া পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও কর্ণফুলীতেও ইলিশ বিচরণ করে। বড় আকারের একটি মা ইলিশ ২০ লক্ষ পর্যন্ত ডিম দেয়। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে মা ইলিশ বেশি ডিম দেয়।
খাদ্য
ইলিশ মূলত নীল-সবুজ শৈবাল, ডায়াটম ইত্যাদি খেয়ে বড় হয় ও বেঁচে থাকে।
উৎপাদন ও বিপণন
আমাদের সমুদ্র এলাকার মোহনা ও নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ে। মোট মাছ উৎপাদনের ১৬.৪ ভাগই ইলিশ। ইলিশ আহরণ ও বিপণনে ১০ লক্ষ মানুষ নিয়োজিত।
সুস্বাদু ইলিশ
ইলিশের স্বাদ পায়নি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাঙালির রসনা ইলিশে তৃপ্ত। বিভিন্ন রকম রান্নায় এর বিচিত্র স্বাদ অনুভব করা যায়। ইলিশ ভাজা, ভাঁপা ইলিশ, সরষে ইলিশ, ইলিশের ঝোল বড়ই সুস্বাদু। পদ্মার ইলিশের স্বাদ আর সুগন্ধের তুলনা হয় না।
উপসংহার
বাংলাদেশের জাতীয় সম্পদ ইলিশ। সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী জাটকা ইলিশ ধরা উচিত নয়।
(৬) কাগজ
[সংকেত : ভূমিকা, উদ্ভাবন, প্রস্তুতপ্রণালি, প্রকারভেদ, প্রাপ্তিস্থান, ব্যবহার, উপসংহার]
ভূমিকা
আমাদের প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে কাগজ অন্যতম। জ্ঞানের বিকাশ ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কাগজের অবদান অতুলনীয়। কাগজ আমাদের শিক্ষা ও সভ্যতার বাহন।
উদ্ভাবন
প্রায় দুই হাজার বছর আগে চীনে প্রথম কাগজ উদ্ভাবন হয় বলে অনেকের ধারণা। মিসরের প্যাপিরাস নামক একপ্রকার গাছের পাতা দিয়ে কাগজ তৈরি হতো। ১৮৭৩ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম কাগজের কল তৈরি হয়।
উপকরণ
পাটকাঠি, খড়, বাঁশ, তুলা, ঘাস প্রভৃতি দিয়ে কাগজ তৈরি করা হয়। বর্তমানে ফার নামক কাঠ দিয়েও কাগজ তৈরি হচ্ছে।
প্রস্তুত প্রণালি
কাগজ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো যন্ত্রের সাহাঘ্যে চূর্ণ করে নিতে হয়। এর সঙ্গে আঠালো একরকম জিনিস মেখে প্রস্তুত করা হয় কাগজের মণ্ড। এই মণ্ডকে শোধন করে ভেতরের পানি বের করে নেওয়া হয়। পরিণত মণ্ডের সঙ্গে নানা রকম রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে আধুনিক কাগজ তৈরি হয়।
প্রকারভেদ
কাগজ নানা আকারের ও রঙের হয়ে থাকে। ফুলস্ক্যাপ, ডাবল ব্রাউন, রয়েল, ডিমাই প্রভৃতি আকারের কাগজ বই ছাপার কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ‘নিউজপ্রিন্ট’ কাগজ মূলত সংবাদপত্র ছাপার কাজে ব্যবহার করা হয়।
প্রাপ্তিস্থান
পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই কাগজের কল আছে। বাংলাদেশের কাগজের কলগুলোর মধ্যে খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিল, চন্দ্রঘোনা পেপার মিল, পাকশী পেপার মিল উল্লেখযোগ্য।
ব্যবহার
দৈনন্দিন জীবনে কাগজ একটি আবশ্যকীয় উপাদান। কাগজ প্রধানত বইখাতা, পত্রিকা, প্যাকেট ইত্যাদি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। কাগজ আছে বলেই আমরা ঘরে বসে বিশ্বের নানা খবর সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানতে পারছি।
উপসংহার
কাগজ মানবসভ্যতার ধারক ও বাহক। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাগজের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। মানুষের সভ্যতা যত দিন থাকবে, তত দিন কাগজও থাকবে।
আশা করি “পঞ্চম শ্রেণি - বাংলা রচনা (৬)”এই বিষয়টি আপনি বুঝতে পেরেছেন। যদি এই পোস্টটি থেকে কিছুটা উপকার হয়ে থাকে, তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ