অনলাইন শিশু যৌন নির্যাতন এবং যৌন শোষণ কি বুঝায়?- বিস্তারিত

অনলাইন শিশু যৌন নির্যাতন এবং যৌন শোষণ কি বুঝায়?:  আসসালামু আলাইকুম, আমি জানি আপনারা অনলাইন শিশু যৌন নির্যাতন এবং যৌন শোষণ কি বুঝায়? বিষয়ে ধারণা নিতে অনলাইনে সার্চ করছেন। 

এখানে আপনি এই বিষয় সম্পর্কে সব জানতে পারবেন। তো আসুন আমরা জেনে নিই।

অনলাইন শিশু যৌন নির্যাতন এবং যৌন শোষণ কি বুঝায়?

অনলাইন শিশু যৌন নির্যাতন এবং যৌন শোষণ কি বুঝায়?

অনলাইন যৌন হয়রানি বা নির্যাতন বলতে ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তথা ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোন শিশুর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে তাকে অশালীন কথা, বার্তা, ছবি কিংবা ভিডিও প্রদান করা, আবেগীয় সম্পর্ক স্থাপন করে নানা যৌনকর্মে নিয়োজিত করা, শিশুর বিবিধ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিংবা অর্থ বা কোনো উপহার প্রদানের মাধ্যমে তাকে নানা যৌনতামূলক অঙ্গভঙ্গি কিংবা আচরণে প্ররোচিত করা ইত্যাদিকে বোঝানো হয়। অধিকাংশ সময় অপরিচিত ব্যক্তির দ্বারা এই রকম হয়রানি সংঘটিত হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিচিত জনরাই এরূপ হয়রানি করে থাকে। ইন্টারনেট ব্যবহার করে কোনো শিশুকে অশালীন কথা, ছবি, কিংবা ভিডিও প্রদান করাই হচ্ছে অনলাইনে শিশু যৌন নির্যাতন।


আবার অনেক সময় দেখা যায় যৌন সম্পর্ক স্থাপনের কিছু স্থিরচিত্র কিংবা ভিডিও ধারণ করে অনলাইন জগতে ছেড়ে দেওয়া হয়। একইভাবে এসকল ধারণকৃত ভিডিও সংরক্ষণ করে ভক্তভোগীকে ভয় দেখিয়ে পুনরায় তার সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করা হয়। এছাড়াও অনেক সময় ধারণকৃত ভিডিও বাণিজ্যিকভাবে ক্রয়বিক্রয়ের মাধ্যমে আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে থাকে। এভাবে শিশুরা অনলাইনে যৌন শোষণের শিকার হয়ে থাকে। অনলাইনে শিশু নির্যাতনের ধরন বিভিন্ন ধরনের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (যেমন কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল, ট্যাব) মাধ্যমে নানাভাবে শিশু নির্যাতনের শিকার হতে পারে। যেমন–


  • ওয়েবক্যামের মাধ্যমে অনলাইনে ধারণকৃত শিশুর যৌনচিত্র প্রচার এবং তার বিনিময়ে অর্থ প্রদান করার মাধ্যমে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ২০১৩-২০১৪ সালে ফিলিপাইনে অভিভাককরা বাণিজ্যিকভাবে তাদের শিশুদের ওয়েব ক্যামেরার মাধ্যমে অনলাইনে যৌন কার্যক্রমে সম্পৃক্ত হবার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল এবং এই যৌনচিত্র অনলাইনের মাধ্যমে যারা দেখেছিল, তাদের প্রদান করা অর্থ ঐ শিশুর অভিভাবক এবং মধ্যস্থতাকারী গ্রহণ করেছিল। এক্ষেত্রে শিশুর অভিভাবকদের ধারণা ছিল এটি তাদের শিশুদের ওপর কোন প্রকার প্রভাব ফেলবে না, কেননা তারা শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে না।
  • সাইবার হয়রানির মাধ্যমেও শিশু নির্যাতনের শিকার হতে পারে। যখন কোনো ব্যক্তি ইলেকট্রনিক যোগাযোগের মাধ্যমে অন্যজনকে হুমকি বা ভীতিমূলক বার্তা প্রদান করে তখন তাকে সাইবার হয়রানি বলে। এর শিকার শিশুও হতে পারে।
  • অনেক সময় শিশুরা কোনো বল প্রয়োগ ছাড়া সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছায় যৌন উত্তেজনা মূলক ছবি বা ভিডিও ধারণ করে থাকে তাকে সেক্সটিং বলে। এই ছবিগুলো তারা তাদের ছেলে বা মেয়ে বন্ধুকে পাঠায়। কিন্তু কিছু দিন পর তাদের সম্পর্ক ভেঙে গেলে এই ছবিগুলো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়তে পারে। শিশুদের প্রতি আকৃষ্ট ব্যক্তিরা তা সংগ্রহ ও বিক্রি করতে পারে, যা শিশুদের বতর্মান ও ভবিষ্যৎ বিকাশের ক্ষেত্রে ভয়াবহ হুমকি হিসেবে দেখা দেবে। আমাদের দেশে আমরা প্রায়শ দেখি এ ধরনের ঘটনা ঘটছে।
  • শিশুরা তাদের যৌন উসকানিমূলক ছবির কারণে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নির্যাতনকারীরা তাদের এই ছবিগুলো ঐ শিশুর বন্ধু, পরিবার বা বৃহৎ পরিসরে বিতরণ করার হুমকি দিয়ে তাদের সাথে যৌন সম্পর্ক করতে বাধ্য করতে পারে। এই ধরনের আচরণকে সেক্সটরশন বলা হয়।
  • গ্রুমিং- এর মাধ্যমেও অনলাইনে শিশু নির্যাতন হতে পারে। গ্রুমিং হলো যখন কোনো বয়স্ক ব্যক্তি বন্ধুত্বপূর্ণ উৎসাহব্যঞ্জক অথবা কূটকৌশলের মাধ্যমে কোনো শিশুকে যৌন কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য করে। এ ধরনের অনেক গ্রুমিং-এর ঘটনা ইন্টারনেট বিশেষত (ফেসবুক)-এর মাধ্যমে তৈরি হয়। পরে তারা সরাসরি দেখা করতে আসে এবং নানা কৌশলে যৌন সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করে। গ্রুমিং-এর অংশ হিসেবে নির্যাতনকারীরা শিশুদের যৌনতা সম্পকির্ত কোনো ছবি বা যৌনসামগ্রী দেখতে প্ররোচিত করে। যৌনতাকে সাধারণ বিষয় হিসেবে শিশুদের কাছে উপস্থাপন করাই এর মূল উদ্দেশ্য।
  • অনেক সময় শিশুকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দিয়ে অথবা অর্থ উপহার, খাদ্য, চাকরি ইত্যাদি দেওয়ার মাধ্যমে তাকে যৌন শোষণ করতে পারে। এক্ষেত্রে অন্য শিশুর যৌন শোষণের ভিডিও বা ছবির দৃশ্য দেখাতেও অপরাধী বাধ্য করে থাকে। কোনো শিশু যৌন সম্পর্ক স্থাপনে অস্বীকৃতি জানালে অপরাধীরা শিশুকে অশ্লীল কথা বলে, অনেক ক্ষেত্রে তাকে বা তার পরিবারের সদস্যদের শারীরিক নির্যাতন করে তাকে যৌন কাজে যেতে বাধ্য করে।
  • অনেক সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের (ফেসবুক , টুইটার ইত্যাদি) দ্বারাও শিশু নির্যাতন ঘটতে পারে, যেমন কারো নামে ফেসবুকে মিথ্যা একাউন্ট খুলে তাকে নানাভাবে হয়রানি করা বা কারো একাউন্ট, পাসওয়ার্ড বা তথ্য হ্যাক করার দ্বারা হয়রানি করা। আবার অজ্ঞাত ব্যক্তির সাথে চ্যাটিং করার মধ্য দিয়ে শিশুরা অনলাইনে নির্যাতনের শিকার হতে পারে।



আশা করি অনলাইন শিশু যৌন নির্যাতন এবং যৌন শোষণ কি বুঝায়?এই বিষয়টি আপনি বুঝতে পেরেছেন। যদি এই পোস্টটি থেকে কিছুটা উপকার হয়ে থাকে, তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। "ধন্যবাদ"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন