অধ্যায়-৭: পদার্থের বৈশিষ্ট্য এবং বাহ্যিক প্রভাব, ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান- বিস্তারিত

অধ্যায়-৭: পদার্থের বৈশিষ্ট্য এবং বাহ্যিক প্রভাব, ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান:  আসসালামু আলাইকুম, আমি জানি আপনারা অধ্যায়-৭: পদার্থের বৈশিষ্ট্য এবং বাহ্যিক প্রভাব, ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান বিষয়ে ধারণা নিতে অনলাইনে সার্চ করছেন। এখানে আপনি এই বিষয় সম্পর্কে সব জানতে পারবেন। তো আসুন আমরা জেনে নিই।

অধ্যায়-৭: পদার্থের বৈশিষ্ট্য এবং বাহ্যিক প্রভাব, ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান

অধ্যায়-৭: পদার্থের বৈশিষ্ট্য এবং বাহ্যিক প্রভাব, ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞান

প্রশ্ন-১. পদার্থ কী?
উত্তর : যা জায়গা দখল করে, যার ওজন আছে এবং বল প্রয়োগে বাধা প্রদান করে তাকেই পদার্থ বলে।

প্রশ্ন-২. পদার্থের কয় অবস্থা ও কী কী?
উত্তর : পদার্থের তিন অবস্থা। যথা– কঠিন, তরল ও বায়বীয়।

প্রশ্ন-৩. গলনাঙ্ক কী?
উত্তর : স্বাভাবিক চাপে (1 atm) যে তাপমাত্রায় কোনো কঠিন পদার্থ তরলে পরিণত হয় সেই তাপমাত্রাকে সেই পদার্থের গলনাঙ্ক বলে।

প্রশ্ন-৪. স্ফুটনাঙ্ক কী?
উত্তর : যে তাপমাত্রায় কোনো তরল পদার্থ ফুটতে শুরু করে এবং বাষ্পে পরিণত হয় সেই তাপমাত্রাকে ঐ তরল পদার্থের স্ফুটনাঙ্ক বলে।

প্রশ্ন-৫. আয়তন কী?
উত্তর : কোনো বস্তু যতটুকু জায়গা দখল করে তাকেই সেই বস্তুর আয়তন বলে।

প্রশ্ন-৬. ঘনীভবন কাকে বলে? ঘনীভবনের উদাহরণ
উত্তর : বাষ্পীয় পদার্থকে ঠাণ্ডা করে তরলে পরিণত করাকে ঘনীভবন বলে। যেমন– জলীয় বাষ্প তাপশক্তি নির্গত করে ঠাণ্ডা হয়ে পানিতে পরিণত হয়।

প্রশ্ন-৭. শীতলীকরণ কাকে বলে?
উত্তর : যে প্রক্রিয়ায় কোনো পদার্থকে গ্যাসীয় অবস্থা থেকে তরলে বা তরল থেকে কঠিনে রূপান্তরিত করা হয় তাকে শীতলীকরণ বলে।

প্রশ্ন-৮. হাইড্রোজেন কোন ধরনের পদার্থ?
উত্তর : হাইড্রোজেন এক ধরনের গ্যাসীয় পদার্থ।

প্রশ্ন-৯. সাধারণ লবণের গলনাঙ্ক কত?
উত্তর : সাধারণ লবণের গলনাঙ্ক ৮০১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রশ্ন-১০. পানি কয়টি অবস্থায় থাকতে পারে?
উত্তর : পানি তিন অবস্থায় থাকতে পারে।

প্রশ্ন-১১. পানির গলনাঙ্ক কত?
উত্তর : পানির গলনাঙ্ক শূন্য (০) ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রশ্ন-১২. বিদ্যুৎ পরিবাহী ও অপরিবাহী পদার্থের নাম লিখ।
উত্তর :
১. বিদ্যুৎ পরিবাহী পদার্থের নাম : অ্যালুমিনিয়াম, সোনা, তামা।
২. বিদ্যুৎ অপরিবাহী পদার্থের নাম : হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন।

প্রশ্ন-১৩. অধাতু বলতে কী বুঝায়?
উত্তর : অধাতু বলতে এমন পদার্থকে বোঝায় যা বিদ্যুৎ ও তাপ সুপরিবাহী নয় ওজনে হালকা এবং অনুজ্জ্বল। অধাতুকে আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় না। এছাড়া এরা ঘাতসহ ও নমনীয় নয়। যেমন- হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ইত্যাদি।

প্রশ্ন-১৫. শব্দ পদার্থ নয় কেন?
উত্তর : আমরা জানি, যা জায়গা দখল করে এবং যার ওজন আছে তাই পদার্থ। শব্দ জায়গা দখল করে না এবং শব্দের ওজন নেই। তাই শব্দ এক প্রকার শক্তি, পদার্থ নয়।


প্রশ্ন-১৬. বায়ুকে মিশ্র পদার্থ বলা হয় কেন?

উত্তর : বায়ু একটি মিশ্র পদার্থ। কারণ, বায়ুতে নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, জলীয় বাষ্পসহ বিভিন্ন ধরনের মৌলিক ও যৌগিক পদার্থ থাকে। বায়ুর এ উপাদানগুলো একে অপরের সাথে বিক্রিয়া না করে অবস্থান করে। বায়ুর এই বৈশিষ্ট্যগুলো মিশ্র পদার্থের বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ। তাই বায়ুকে মিশ্র পদার্থ বলা হয়।


ধাতু ও অধাতুর বৈশিষ্ট্য লেখ।

উত্তর : নিচে এদের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো–

ধাতুর বৈশিষ্ট্য :

  • ধাতু সাধারণত উজ্জ্বল।
  • ধাতু সাধারণত শক্ত ও ওজনে ভারী।
  • ধাতুকে আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয়।
  • ধাতুর মধ্য দিয়ে তাপ ও বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারে।
  • ধাতু ঘাতসহ ও নমনীয়। একে পিটিয়ে পাতলা পাতে ও সরু তারে পরিণত করা যায়।
  • ধাতু সাধারণত উচ্চ তাপে গলে।

অধাতুর বৈশিষ্ট্য:

  • অধাতু সাধারণত উজ্জ্বল নয়।
  • অধাতু সাধারণত নরম ও হালকা।
  • অধাতুকে আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় না।
  • এর মধ্যে দিয়ে তাপ ও বিদ্যুৎ চলাচল করতে পারে না।
  • অধাতুকে পিটিয়ে পাতলা পাতে কিংবা তারে পরিণত করা যায় না।
  • অধাতুসমূহ নিম্ন তাপে গলে।
  • এরা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় কঠিন বা গ্যাসীয়।


পানির তিনটি অবস্থা ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : পানির তিনটি অবস্থা হলো বরফ, পানি আর বাষ্প। পানি যখন বরফ আকারে থাকে তখন এটিকে পানির কঠিন অবস্থা বলা হয়। পানি আকারে থাকলে তখন এটিকে বলা হয় তরল অবস্থা আর বাষ্প আকারে থাকলে তখন এটিকে গ্যাসীয় অবস্থা বলে।

বিদ্যুৎ পরিবহনে তামার তার ব্যবহারের কারণ কী?
উত্তর : বিদ্যুৎ পরিবহনে তামার তার ব্যবহার করা হয়। কারণ –

  • তামা একটি বিদ্যুৎ পরিবাহী ধাতু। ধাতুসমূহ বিদ্যুৎ পরিবহন করে। তবে সব ধাতুর বিদ্যুৎ পরিবহন ক্ষমতা এক নয়।
  • ধাতুসমূহের মধ্যে তামার বিদ্যুৎ পরিবাহিতা অন্যান্য ধাতুর তুলনায় বেশি। এটি দামেও সস্তা।
  • এজন্য বিদ্যুত পরিবহনে তামার তার ব্যবহার করা হয়।


মৌলিক পদার্থ কাকে বলে? মৌলিক পদার্থের উদাহরণ দাও।

উত্তর : যে পদার্থকে ভাঙলে ওই পদার্থের উপাদান ছাড়া অন্য কোনো পদার্থের উপাদান পাওয়া যায় না তাকে মৌলিক পদার্থ বলে। যেমন– হাইড্রোজেন (H), অক্সিজেন (O), কার্বন (C), আয়রণ (Fe), কপার (Cu) ইত্যাদি।


তরল পদার্থ যে পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রের আকার ধারণ করে কেন?

উত্তর : তরল পদার্থের নির্দিষ্ট আয়তন আছে; কিন্তু তরল পদার্থের নির্দিষ্ট কোনো আকার নেই। তরল পদার্থের নির্দিষ্ট কোনো আকার না থাকার কারণে যখন যে পাত্রে রাখা হয় সেই পাত্রের আকার ধারণ করে।



বহুনির্বাচনি প্রশ্ন ও উত্তর

১। কোন পদার্থের দৃঢ়তা কম?

ক) ইট    খ) লোহা    গ) কলা    ঘ) বরফ

উত্তরঃ গ)


২। কোন পদার্থটি বোতলে রেখে দিলে সম্পূর্ণ বোতল জুড়ে থাকবে?

ক) পানি    খ) সেন্ট    গ) দুধ    ঘ) পাউডার

উত্তরঃ খ)


সৃজনশীল প্রশ্ন ও উত্তর

সৃজনশীল প্রশ্ন ১ : ফজলুল হক সাহেবের মা মাটির চুলায় মাটির পাতিলে রান্না করেন। অপরদিকে তার স্ত্রী গ্যাসের চুলায় এলুমিনিয়ামের পাতিলে রান্না করেন।

ক. পদার্থ কী?

খ. অধাতু বলতে কী বোঝায়?

গ. ফজলুল হক সাহেবের স্ত্রীর ব্যবহৃত পাত্রটির উপাদানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো।

ঘ. রান্নার ক্ষেত্রে ফজলুল হক সাহেবের মা ও স্ত্রীর মধ্যে কে বেশি সুবিধা পায় বিশ্লেষণ করো।

১ নং প্রশ্নের উত্তর

ক. যা জায়গা দখল করে, যার ওজন আছে এবং বল প্রয়োগে বাধা প্রদান করে এমন সবই পদার্থ।

খ. অধাতু বলতে এমন পদার্থকে বোঝায়, যা বিদ্যুৎ ও তাপ অপরিবাহী, ওজনে হালকা এবং অনুজ্জ্বল। অধাতুকে আঘাত করলে ঝনঝন শব্দ হয় না। এছাড়াও এরা ঘাতসহ ও নমনীয় নয়। যেমন— হাইড্রোজেন, অক্সিজেন ইত্যাদি।

গ. ফজলুল হক সাহেবের স্ত্রীর ব্যবহৃত পাত্রটির উপাদান হচ্ছে এলুমিনিয়াম। এলুমিনিয়াম একটি হালকা নীলাভ সাদা ধাতু। নিচে এই উপাদানটির গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হলো—

তাপ সুপরিবাহী হওয়ায় রান্নার কাজে অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র ব্যবহার করা হয়। কারণ এটি সহজে তাপ পরিবহন করে। ফলে ভাত, মাছ, সবজি ইত্যাদি দ্রুত সিদ্ধ হয়। তাপ পরিবহনের প্রয়োজন হয় এমন যন্ত্রপাতি, যেমন— রেফ্রিজারেটর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ইত্যাদিতে অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহৃত হয়। এটি বিদ্যুৎ পরিবাহী ও সস্তা হওয়ায় বৈদ্যুতিক তার ও বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়।

এর ঘনত্ব বেশি ও শক্ত হওয়ায় গৃহস্থালির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও কলকারখানায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। চকচকে হওয়ায় সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এটি বাসন-কোসন প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও এটি খুব হালকা ও ভার বহনের ক্ষমতা থাকায় এর ধাতুর সংকরসমূহ বর্তমানে উড়োজাহাজ, রেলগাড়ি, মোটরগাড়ির বিভিন্ন অংশ নির্মাণে ব্যবহৃত হয়।

ঘ. উদ্দীপক হতে দেখা যায়, ফজলুল হক সাহেবের স্ত্রী অ্যালুমিনিয়ামের পাতিল ব্যবহার করেন। তাই রান্নার ক্ষেত্রে ফজলুল হক সাহেবের মায়ের তুলনায় স্ত্রী বেশি সুবিধা পান। অ্যালুমিনিয়াম ধাতু হওয়ায় তাপ সুপরিবাহী। তাই অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র চুলার আগুন থেকে তাপ পরিবহন করে রান্নার মূল উপাদানে (যেমন— চাল বা মাছ) দ্রুত পৌছে দেয় এবং তখন উপাদানগুলো ঐ তাপে দ্রুত সিদ্ধ হয়ে যায়। ফলে রান্না তাড়াতাড়ি হয়। এছাড়াও তার স্ত্রীর গ্যাসের চুলা ব্যবহারের কারণে জ্বালানিও বেশি খরচ হয় না।

অপরদিকে, ফজলুল হক সাহেবের মা মাটির পাতিলে রান্না করেন। মাটির পাতিলের মূল উপাদান সিলিকা অধাতব পদার্থ হওয়ায় এর তাপ পরিবাহিতা কম। ফলে পাতিলের মধ্য দিয়ে তাপ ধীরগতিতে চলাচল করে এবং সহজে পাতিলে থাকা উপকরণ সিদ্ধ হয় না। তাই রান্না করতে দীর্ঘ সময় লাগে। তাছাড়া মাটির চুলায় তিনি জ্বালানি হিসেবে যে কাঠখড়ি ব্যবহার করেন তার প্রায় ৮৫ ভাগ নষ্ট হয়ে যায় এবং মাত্র ১৫ ভাগ কাজে লাগে। তাই বলা যায় যে, ফজলুল হক সাহেবের স্ত্রী তার মায়ের চেয়ে বেশি সুবিধা পান।


আশা করি অধ্যায়-৭: পদার্থের বৈশিষ্ট্য এবং বাহ্যিক প্রভাব, ষষ্ঠ শ্রেণির বিজ্ঞানএই বিষয়টি আপনি বুঝতে পেরেছেন। যদি এই পোস্টটি থেকে কিছুটা উপকার হয়ে থাকে, তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। "ধন্যবাদ"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন